• Connect Us

  • Share Us

 | 

Religion & Spirituality

জ্যোতিষ ও তন্ত্র যোগ

 FAQ1. মন্ত্র ও তন্ত্র কি ? উত্তর -প্রকৃতি তার নিজের স্বভাব কে সাউন্ড বা শব্দের মাধ্যমে ব্যক্ত করে ,এই সাউন্ড বা শব্দ ই মন্ত্র। প্রচলিত এবং ব্যাপক অর্থে বলা যায় জীবের জগতের নিজের বাসনা কে ব্যক্ত করবার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো সাউন্ড বা শব্দ অর্থাৎ মন্ত্র ,মনের সংকল্প  কে বাহ্যিক ভাবে রূপায়ণ করবার মাধ্যম কে মন্ত্র বলা হয়। আর মন্ত্রের সাথে প্রকৃতি জাত বস্তু ,প্রাণী বা গাছের ( সজীব বা নির্জীব ) সন্নিবেশ করে যে সংকল্প রচনা করা হয় তাকে তন্ত্র বলে ,তবে তন্ত্র নির্দিষ্ট মন্ত্র ছাড়াও সম্পন্ন হতে পারে। মন্ত্র ও তন্ত্রে সংকল্প ই প্রধান বিষয়। আধ্যাত্মিক  অর্থে মনের ত্রাণ বা মুক্তি কে মন্ত্র  বলা হয়েছে। দেহের মুক্তি বা ত্রাণ কে ও তন্ত্র বলা হয়েছে , এক্ষেত্রে - মন +ত্র = মন্ত্র । দেহের মুক্তি বা ত্রাণ কে ও তন্ত্র বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তন্ + ত্র = তন্ত্র ।   

FAQ 2 )- সকল শব্দ বা সাউন্ড ই কি মন্ত্র  ?  উত্তর- প্রকৃত পক্ষে ব্রহ্মের কাছে  সকল মন্ত্রের শক্তি ও অর্থ এক।কারণ  ব্রহ্মের একটি রূপভেদ ই সাউন্ড বা শব্দ। তবে প্রার্থীকে তার আলাদা আলাদা কামনা পূরণ করবার জন্য পার্থক্য পূর্ণ সাউন্ড বা শব্দের প্রয়োজন ,তাই মন্ত্র ও আলাদা আলাদা বর্ণিত  হয়েছে। আমরা সারাদিন যে সব শব্দ বা সাউন্ড উচ্চারণ করি সেগুলো দিয়ে ও আমরা সংকল্প করতে পারি , তবে তন্ত্র ও মন্ত্র শাস্ত্রে সেই সব ধ্বনি বা সাউন্ড বা  শব্দের  অবতারণা করা হয়েছে যেগুলো আমাদের পার্থিব দৈনন্দিন   জীবনে সচরাচর উচ্চারিত হয় না    কিন্তু প্রায়ই দীর্ঘ্ স্বরে , নাসিক্য ও অনুনাসিক্য বর্ণ সহযোগে উচারিত হয় যাতে সংকল্প দৃঢ় ও মনযোগে সুবিধা হয়।              FAQ-3)- মন্ত্র ও তন্ত্র শাস্ত্র কি ? উত্তর- প্রচলিত অর্থে মন্ত্র ও তন্ত্র শাস্ত্রের প্রবর্তক হলে ভগবান শিব। কামনাসক্ত মানুষের কামনা পূরণের জন্য ও মানুষের কল্যাণের জন্য  ভগবান শিব তার পত্নী পার্বতী কে সংলাপ আকারে যে সব প্রবচন দিয়েছেন তাই আমাদের কাছে তন্ত্র শাস্ত্র।  মোট কথা ভগবান শিবের মুখনিঃসৃত বাণী ই তন্ত্র  যা পার্বতী রুপি প্রকৃতিকে জানিয়ে গেছেন ভগবান শিব স্বয়ং আর এটাই   ই তন্ত্র শাস্ত্র বলে কথিত।                                                                                                        

FAQ-4)- তন্ত্র  শাস্ত্রের প্রমাণ্য কি  ? উত্তর - মহানির্বান তন্ত্র ,কামাখ্যা তন্ত্র ,নায়িকা তন্ত্র , শিব তন্ত্র  এরকম বহু তন্ত্র গ্রন্থ ভারতবর্ষে প্রচলিত।সংকল্পের ক্ষেত্রে  মন্ত্রে চর্চায় ভক্তি ও নিষ্ঠা প্রধান তবে সংকল্পের ক্ষেত্রে তন্ত্রে আচার প্রধান। তন্ত্র যার বা যাদের প্রবচন ই হোক না কেন দেখার বিষয় সেটা মানব কল্যাণ করতে সমর্থ কিনা ,মানুষের সংকল্প পূরণ করতে সমর্থ কিনা আর যখন সেটা সমর্থ হয় তখন ই সেই প্রবচন বা পদ্ধতি কে প্রামাণ্য হিসেবে ধরা উচিত।       
 FAQ-5)- মন্ত্র  ও  তন্ত্রের কি পার্থক্য ? উত্তর - সংকল্প পূরণ করবার জন্য শুধু মাত্র মনের সংযোগ করা হয় যখন তখন সেটা মন্ত্র চর্চা। মন্ত্র চর্চার জন্য মন দরকার। নির্দিষ্ট সংকল্প পূরণের জন্য নির্দিষ্ট দিকে মন কে গতিশীল রাখতে হয় ,তার জন্য মনের চঞ্চলতা ,মনের হিংসা বা ঈর্ষা  ,দুশ্চিন্তা ,ইত্যাদি বিকার দূর করা প্রয়োজন ,কিন্তু কামনাসক্ত সাধারণ মানুষ আর একটি কামনা পূরণ করবার জন্য হলেও ক্ষনিকের জন্য ও মনকে নির্দিষ্ট দিকে গতিশীল করতে পারে না। জীবের এই অসহায়ত্ব কে উপলব্ধি করেই ভগবান শিব প্রকৃতির কাছে তন্ত্রের     অবতারণা করেছেন। সংকল্প পূরণের ক্ষেত্রে মনের সাথে  সজীব বা নির্জীব বস্তুর যে সংযোগ করা হয় তা ই তন্ত্র। তন্ত্রে আচার প্রধান হবার কারণে সাধারণ মানুষের জন্য সহজ তাই এখনো পর্যন্ত তন্ত্রের প্রচলন সর্বাধিক।           
FAQ-6 )-  বেদ ও ভক্তি থাকতে তন্ত্রের কি প্রয়োজন ? উত্তর -  বেদে ও মানুষের কামনা পূরণের জন্য  কিছু কিছু  পদ্ধতি আছে কিন্তু সেটা বৈদিক যুগের জন্য যথেষ্ঠ ছিল কিন্তু বর্তমান সাধারণ  মানুষের ব্যাপক কামনা পূরণের জন্য দরকার সুবিস্তারিত ও সহজ পদ্ধতি সমূহ যার জন্য এই  তন্ত্রের প্রয়োজন। বেদের বর্ণনা ভাষা গত ভাবে প্রাচীন হওয়ায়  সাধারণের নাগালের বাইরে রয়েছে তাই বেদ ছাড়াও তন্ত্র শাস্ত্রের প্রয়োজন। তবে বেদে কামনা পূরণের জন্য যে আচার বা প্রক্রিয়া আছে সেগুলো তান্ত্রিক আচার যদি ও সেগুলো পৌরাণিক শিবের মুখনি সৃত নয়।ভক্তি দুই  রকম ,নিষ্কাম আর সকাম ভক্তি  আর  নিষ্কাম ভক্তির তাৎপর্য হলো নির অহংকারিতা ,নিজেকে পরম শক্তির প্রতি সমর্পন করা। আর নিষ্কাম ভক্তি তো তন্ত্রের বিরুদ্ধে থাকে ,নিষ্কাম ভক্তের কাছে কামনা ই থাকে না তাই সেখানে তন্ত্র তথা কামনা পূরণের প্রশ্ন আসে না। কিন্তু সকাম ভক্তি ও  যদি অবিচল  না থাকে যদি নিষ্ঠা না থাকে  তবে সকাম ভক্ত ও তার লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হয় না ,সকাম ভক্তি ও অবিচ্ছিন্ন না থাকার কারণে এবং ভক্তির সাথে নিষ্ঠা অর্থাৎ Regulation  না থাকার কারণে  মন সংযোগের সাথে বস্তুর সংযোগ  ঘটিয়ে লক্ষ্য পূরণ করবার চেষ্টা করা হয়। ভক্তির সাথে নিষ্ঠা থাকলে সেটা সাধনা হয় ,আর সাধনার সাথে বস্তু থাকলে সেটা তন্ত্র হয় , তাই ভক্তি থাকলে ও কখনো কখনো জীব কামনা পূরণ এ অসমর্থ হয় ,তাই তন্ত্র প্রয়োজন।  তাছাড়া তন্ত্র হচ্ছে ভগবান শিবের সুপারিশ কৃত কিছু আচার পদ্ধতি , ধরুন ,আপনি কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু পেতে আবেদন করতে চান আর সেই  আবেদন পত্র  বা ফর্ম খানা আপনার ইচ্ছানুযায়ী হয় না ,হয় সেই কতৃপক্ষের পছন্দ অনুযায়ী ,আর প্রার্থী কেও সেই কর্তৃপক্ষের পছন্দ কে আবিষ্কার করা উচিত ,সেটাই তার  লাভ। নিষ্কাম ভক্তের কাছে শিব ই পরেমেশ্বর ,তিনি শুধু বেল পাতা তে নন ,সকল পাতাতে সন্তুষ্ট হন। কিন্তু সকাম ভক্তের কাছে  ভগবান শিব যখন সংকীর্ণ অর্থে অর্থাৎ স্বার্থ বা কামনা পূরণের অর্থে একটি বিশেষ বস্তুর চাহিদা করেছেন তখন তিনি নিজের থেকে একটি বিশেষ শক্তি বা দেবতা হিসেবে প্রকাশ করেছেন ,ভগবান এখানে ছোটো হয়েছেন কিছু চাহিদা প্রকাশ করে, বিনিময় অর্থে সকাম   ভক্তের কাছে ভগবান হয় দেবতা , যেমন মহাদেব - মহাদেব বেল পাতাতে   সন্তুষ্ট  ।আত্মা ও পরমাত্মার মাঝে পার্থিব বস্তুর সংযোজন ই তন্ত্র। সেটা নিষ্কাম বা সকাম দুই হতে পারে ,অনেক নিষ্কাম ভক্ত তান্ত্রিক পদ্ধতিতে সাধনা করেছেন বা সিদ্ধ ও হয়েছেন। কিন্তু নিষ্কাম ভক্ত কামনা পূরণের জন্য তান্ত্রাচার করতে পারেন না বা করেন না,কেন না  নিষ্কাম ভক্তি কামনার বিরোধী।  

  FAQ-7 )  শিব কে আশুতোষ  কেন বলা  হয়েছে  ? উত্তর :  ভগবান শিব তন্ত্রের কান্ডারি , সাধারণ জীবের কামনা পূরণ করতে হলে তাকে সহজে নমনীয় হতেই হবে ,শুধু দেবতা বা  মানুষ নয়  ,দানবের প্রার্থনাতেও  তিনি সাড়া দেন। শিব খুব তাড়াতড়ি সন্তুষ্ট হয় তাই তাকে আশুতোষ বলা হয় , অখ্যাত ফুল ,বুনো ফুল , বিষ ফল যেমন ধুতুরা , এতেও উনি খুব খুশি হোন ,তার মানে সুগন্ধ ফুল নয় বিষ ফুল এ ও উনি খুশি হন ,এটা ভগবান শিবের উদারতার মাহাত্ম। 

 FAQ-08)- ভগবান কিসে  সন্তুষ্ট হয়?  উত্তর -  সকল সৃষ্টি ই ভগবানের তাই কোনো সৃষ্টির প্রতি ভগবানের কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকতে পারে না , ধুতরা ফুল আর পদ্ম ফুল তার কাছে সমান। নিয়তই   পরমাত্মা আকর্ষণ করে আত্মা কে কিন্তু দেহধারী কামনাসক্ত বা মোহো যুক্ত  আত্মা সেই পরমাত্মার আকর্ষণ অনুভব করতে পারে না , জীব বা  আত্মা যখন মোহো মুক্ত হবার চেষ্টা করে ,নিজেকে ভগবানের প্রতি পূর্ণ সমর্পন করে তখন ই সত্যিকারে ভগবান খুশি হন ,আর নিজেকে সমর্পন করতে পারলে ভগবান বা দেবতার পায়ে কি রঙের ফুল বা কি পাতা অর্পণ করলাম তার কোনো বাধ্যকতা থাকে না। 

  FAQ- 9 )  তান্ত্রিক বা অঘোরী আর সাধু কাকে বলে -   তান্ত্রিক বা অঘোরী আর সাধু কাকে বলে ?   উত্তর -যারা শক্তির উপাসনা করেন তাদের কে ও তান্ত্রিক বলা হয় কিন্তু প্রচলিত অর্থে  যিনি তন্ত্র চর্চা করেন তিনি ও তান্ত্রিক।  অঘোর   থেকে অঘোরী ।  ঘোরা অর্থাৎ ( ROAMING )আবর্তন করা ,আর সেই ঘোরা থেকে ঘোর আর ঘোর এর বিপরীত হলো  অঘোর  এর অর্থ  আবর্তনহীনতা ( ROAMING LESSNESS ) ।  তাহলে অঘোরী  আর অর্থ হলো আবর্তনকারী নয় এমন। অর্থাৎ জন্ম মরণ চক্রে আবর্তিত হতে চায় না ,তারা খুব তাড়াতাড়ি পরমাত্মার সাথে মিলতে চায়, পৌরাণিক দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায় লঙ্কারাজ রাবন ছিলেন একজন অঘোরী উনি দ্রুত ভগবানের সাথে মিলিত হবার জন্য চার  বার রাক্ষস জন্ম নিতে রাজি হয়েছিলেন যাতে বেশি দিন ধরে ভগবান থেকে দূরে না থাকা হয় ,দানব হোক  আর দেবতা এ হোক ভগবানের সাথে মিলিত হওয়াই যদি উদ্দেশ্য হয় তবে পথ যদি কর্দমাক্ত ও হয় তাতে কি ,অমৃতের সাথে মিশতে পারলে কে তম গুনের আর সাত্ত্বিক  গুনের ছিল তাতে কিছুই যায় আসে না অর্থাৎ দ্রুত পেতে গেলে আপনাকে ঋণাত্মক বা তম বা আসুরিক ভাব কে অবলম্বন করতেই হবে কিন্তু ,পৃথিবীর ও  নিজের দেহের আকর্ষণ এবং মোহো থেকে মুক্ত রাখবার জন্য অঘোরী নানা রকম আচার অবলম্বন করে ,তার মধ্যে নিজেকে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে রাখা , সৌন্দর্য এর সাথে সম্পর্ক না রাখা , এমন কি অখাদ্য কেও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা। অর্থাৎ তামসিক পন্থা দিয়ে নিজের মনের তামসিকতা কে ,মোহো কে দূর করা যেমন কাটা দিয়ে কাটা তোলা। ধরুন একটি মন্দিরে  এ যাবার পথ ২ টো আছে ,যে পথ টা আরামদায়ক কিন্তু দূর বেশি তাতে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে ,আর একটা পথ আছে সোজা যাওয়া যায় ,সময় কম লাগে কিন্তু  কর্দমাক্ত। আর যারা সময় বাঁচানোর জন্য  এই কর্দমাক্ত পথ টিকে বেছে নেন তারাই অঘোরী।অর্থাৎ ঋনাত্বক শক্তির প্রয়োগ করে তামসিক পথেই মনের তামসিকতা কে সরানো।  নিষ্কাম তান্ত্রিক বা অঘোরী আর সাধুর মধ্যে উদ্দেশ্যগত ভাবে কোনো পার্থক্য নেই তবে আচার গত ভাবে পার্থক্য মানে আচরণে পার্থক্য আছে মাত্র। তবুও বাম মার্গীয় তান্ত্রিক আর অঘোরী প্রায় সমান। তবে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো - প্রতি টি সম্প্রদায় বা COMMUNITY তে কিছু অনভিজ্ঞ ,অজ্ঞ ,আর সুযোগ সন্ধানী কিছু মানুষ থাকেন যারা সেই সম্প্রদায়ের অন্তর্নিহিত  দর্শন বা তাৎপর্য না বুঝে বা বুঝে ও সেই অর্থ কে গ্রহণ না করে সেই সম্প্রদায়ের বাহ্যিক আচরণ ও লোকাচার এর প্রতি আকৃষ্ট হয় বা সেই আচরণ কে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে। গভীর নিরীক্ষা করে দেখা গেছে যে  অঘোরী সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচুর মানসিক রোগী আছেন ,তারা অঘোর মার্গের তাৎপর্য না অনুভব করে শুধু মাত্র অঘোরীদের বাহ্যিক জীবন যাপনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এই অঘোরী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অনেক অঘোরী আছেন যারা জানেন না শ্মশানের ছাই সে কেন গায়ে মাখাচ্ছে। আবার কোনো কোনো অঘোরী খুব বাড়াবাড়ি ও করে ফেলেন যে সভ্য সমাজ থেকে তাদের কে বহিস্কার করা ছাড়া গতি থাকে না। সাধু : আচরণ গত ভাবে অঘোরীর বিপরীত হলেন সাধু সম্প্রদায়। বস্তু ও বিষয়ের মধ্যে সাত্ত্বিক বলে যেগুলো বিবেচিত সেই সব স্বত্বিক আচরণ নিয়ে সাধুর জীবন যাপন। সাধুকে এতটাই নিষ্কাম আর মোহো মুক্ত  হতে হয় যে কেউ তার পুজো করুক সেটা ও তিনি কামনা করেন না , তার গলায় দেওয়া ফুলের মালা সাধুর কাছে জুতোর মালা মনে হয় ,আর মানুষের দেওয়া জুতোর মালা ফুলের মালা বলে মনে হয়।              

 
FAQ 10) ভারতীয় তন্ত্রের কি কি শ্রেণী বিভাগ আছে? উত্তর -  শান্তি কর্ম , বশীকরণ কর্ম , বিদ্বেষন কর্ম ,উচ্চাটন কর্ম ,স্তম্ভন কর্ম ও মারণ কর্ম। রোগের চিকিৎসা থেকে গ্রহ শান্তি করা পর্যন্ত হলো শান্তি কর্ম। অন্য কে নিজের প্রতি প্রভাবিত করবার প্রক্রিয়া হলো বশীকরণ কর্ম। যখন ২ দুষ্ট  ব্যক্তি মিলে কোনো একজনের ক্ষতি সাধন করে তখন ওই ২ জনের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবার জন্য বিদ্বেষন কর্ম করা হয়। যখন কোনো  ব্যক্তি কারো আশ্রয়ে থেকে তার ই ক্ষতি সাধন করে বা একাধিক ব্যক্তির ক্ষতি  সাধন করে তখন সেই দুষ্ট ব্যক্তির উচ্ছেদের জন্য উচ্চাটন প্রয়োগ করা হয়। যখন কোনো মানুষ কোনো খারাপ কিছু উদ্যোগ নিতে চলছেন বা নিজের বুদ্ধি কে অপব্যবহার করছেন তখন তার গতি রোধের জন্য স্তম্ভন কর্ম প্রয়োগ করা হয়। যখন কোনো একজন মানুষ একাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় , যখন তাকে কোনো ভাবে রোধ করা যায় না ,স্তম্ভন কর্ম করে ও তার গতি রোধ করা যায় না বা যে ইতিমধ্যে অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে তখন তার মৃত্যু কামনার কথা বলা হয়েছে ,তবে এইরকম পরিস্থিতি কাম্য নয় ,মানুষের হাতে মানুষের মৃত্যু আধ্যাত্মিকতার ও নৈতিকতার বিরোধী।                                 FAQ 11) ব্ল্যাকম্যাজিক বা কালা জাদু  কি ? তন্ত্রে বলি প্রথা को গ্রহণ যোগ্য? উত্তর - খুব সোজা অর্থে ব্ল্যাক ম্যাজিক হলো নেগেটিভ ফোর্স প্রয়োগের   একটি মিডিয়া বা মাধ্যম।ব্লাকম্যাজিক ছাড়াও নেগেটিভ ফোর্সের আরও অনেক মাধ্যম আছেযেমন ভুডু ,উচ্চাটন ,স্তম্ভন ইত্যদি।   কিছু অহিন্দু ধর্মী দের ধর্ম দর্শনে ' শয়তান তত্ত্ব' বা SATANISM বলে একটা পর্ব আছে  ,তাদের ধারণা হলো ভগবানের বিপরীত হলো শয়তান ,অমঙ্গলকারী হলো শয়তান আর খারাপ কাজের উৎস হলো শয়তান  তাই সেই শয়তান কে যদি উত্তেজিত বা খুশি করিয়ে অন্য কারো ক্ষতি করা যায় বা কাউকে  প্রভাবিত বা দমন করা যায় আর পদ্ধতির একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ হলো কালা জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক। ব্ল্যাক ম্যাজিক হিন্দু তন্ত্রের মধ্যে পড়ে না তার কারণ হলো হিন্দু আধ্যাত্মিক ধারণা হলো সকল কিছুর উৎস হলো ভগবান ,নেগেটিভ ফোর্স আর পসিটিভ ফোর্স যেটাই হোক না কেন সব কিছুর নিয়ন্তা ও উৎস হলো ভগবান। মানুষ ,দেবতা, দানব বা রাক্ষসের উৎস একই ভগবান সেখানে আলাদা শয়তান কে হাইলাইট করা হয়নি তাই সেখানে আলাদা ভাবে  শয়তান উপাসনা নেই তাই ব্লাকম্যাজিক হিন্দু তন্ত্রের অন্তর্গত নয়। তবে কনসেপ্ট যাই  হোক না কেন নেগেটিভ ফোর্স এর একটা এপ্লিকেশন বা মাধ্যম হলো ব্লাকম্যাজিক বা কালা জাদু। পাশ্চাত্যের ব্ল্যাক ম্যাজিক মূলত কাউকে অভিশপ্ত করণ 'CURSING' বুঝায়। হিন্দু তন্ত্রের মধ্যে শান্তি কর্ম ছাড়া বাকি সকল প্রয়োগ গুলো পসিটিভ ও নেগেটিভ ফোর্সের মধ্যে করা হয়।বিদ্বেষন  উচ্চাটন ,স্তম্ভন ,মারণ  এগুলো তো একরকম ব্লাকম্যাজিক,  এমন কি  ব্লাকম্যাজিক এর থেকে বিশদ ভাবে বিশেষায়িত তবে প্রচারের ক্ষেত্রে এগিয়ে ব্ল্যাক ম্যাজিক শব্দ টা তাই  বিদ্বেষন  উচ্চাটন ,স্তম্ভন ,মারণ এগুলো বুঝতে ও এখন সহজে ব্ল্যাক  ম্যাজিক শব্দ কে ব্যবহার করা হয়।  হিন্দু অধ্যাতিকতা  ও বাহ্যিক পূজা রীতির মধ্যে  ,তন্ত্রের মধ্যে প্রকৃতি কে ধংস ,জীব হত্যা তথা কোনো হিংসা কেই সমর্থন করা হয় না। বলি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে এক শ্রেণীর শয়তান উপাসক বিশ্বাস করতে পারেন যে শয়তান জীবের রক্ত পেলে খুশি হয় ,তারাই হয়তো বলি নামক হিংসার প্রথা প্রচার করেছেন তবে এটা অনুচিত। http://www.abhaykantho.com/single-rs.php?slno=58  https://www.youtube.com/watch?v=FLAaIpTZfjQ                                                                                          
 

FAQ 12)   তান্ত্রিক ,অঘোরী বা সাধু দের চুল-দাড়ি রাখার को প্রয়োজন ?  উত্তর - তান্ত্রিক ,অঘোরী বা  সাধু  দের  চুল দাড়ি রাখার সাথে তাদের কাজে বা আধ্যাত্মিকতার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই আর চুল দাড়ি কোনো সাধু ইচ্ছে করে রাখেন না ,,তবে যারা ইচ্ছা করে রাখেন তারা সুযোগ সন্ধানী। প্রকৃত অর্থে সাধনাকালীন সময়ে সাধক কে সম্পূর্ণ বৈরাগ্য অবলম্বন করতে হয়  কিছু কিছু নমুনা যেমন  ,আয়না দেখা নিষেধ ,বিপরীত লিঙ্গের মানুষ বা তাদের চিত্র পর্যন্ত দেখা নিষেধ থাকে ,নিজের কক্ষে থেকে নিজের খাবার নিজে সংগ্রহ করে যা নিজে  রান্না করে খেতে হয় , ভিক্ষা বৃত্তি   মানে নিরহংকারী হয়ে অন্যের অনুগ্রহের দ্বারা জীবন যাপন ,অযাচক বৃত্তি অর্থাৎ নিজের খাবার নিজে না চেয়ে যদি অন্য কেউ দে তবে সেটা গ্রহণ করে জীবন ধারণ করা ,কপোত বৃত্তি  মানে জমি থেকে  শস্য তোলার পর পড়ে থাকা শস্য দানা সংগ্র করে জীবন ধারণ করা ,এরকম অনেক রকম বৈরাগ্য  দশার মধ্যে দিয়ে যখন সাধক বা সাধু বা তান্ত্রিক জীবন যাপন করেন তখন তার কাছে তার মুখ মন্ডলের প্রসাধন ও পরিচর্যা ,নিজের ত্বকের প্রতি মায়া মোহো কিছুই থাকে না ,নিজের অবয়ব কে আকর্ষণীয় করে তোলার কোনো ইচ্ছাই থাকে না তাই তান্ত্রিক ,অঘোরী বা  সাধু  দের  চুল দাড়ি কাটার অবকাশ থাকে না ,আর সেই অর্থে যে সাধুর চুল দাড়ি আছে তার প্রকৃত বৈরাগ্য থাকা উচিত তবে প্রকৃত বৈরাগী যিনি তিনি চুল দাড়ি কেটে বা মস্তক মুন্ডন করে ও হতে পারেন। তবে এখনো পর্যন্ত সাধুতার প্রতীক চুল দাড়ি থাকা কে বিবেচনা করা হয় ,তাই কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ চুল দাড়ি রেখে সাধুর  অভিনয় করেন। আসলে যদি চুল দাড়ি রাখা টা ই নিয়ম হতো তাহলে তো নারী সাধিকা বিপদে পরে যেত তাদের দাড়ি না থাকার জন্য।    

    
FAQ 13)   তন্ত্রে  তিথি ও তীর্থ  স্থানের কি  তাৎপর্য? তিথি ও তীর্থ স্থানের সাথে তন্ত্রের  সাফল্য নির্ভর করে কি ? উত্তর -  নিষ্কাম ভাবে ভগবানের সাধনা বা পূজা তে কোনো বস্তু বা সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকে না তবে সকাম সাধনাতে কিছু বাধ্যকতা এসে যায়। সকামী সাধকের দেবতা তাই নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট বস্তু বা পূজা পেলে খুব খুশি হবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু হিন্দু তন্ত্রে তিথি এর তাৎপর্য কে স্বীকার করলে ও তান্ত্রিক কর্মকান্ডে নির্দিষ্ট তীর্থস্থান এর উল্লেখ নেই। যেমন  কোনো একটা তান্ত্রিক যজ্ঞ বা পূজা কামাখ্যা মন্দিরে বা তার পাশে গিয়ে করলে বেশি ফল লাভ হবে এর কোনো উল্লেখ নেই। ভগবান শিবের বর্ণিত তন্ত্রে তীর্থ স্থানের কোনো উল্লেখ নেই ,প্রকৃত পক্ষে ফল  টা কর্ম কর্ম অনুসারে  হয়ে থাকে ,কাজ টা সঠিক ভাবে করা ই প্রধান বিষয় , ঘরের কানাচে আর কামাখ্যাতে যেখানে ই করি না কেন সেটা সঠিক ভাবে করাটাই প্রধান বিষয়। তাছাড়া মানুষ যদি বিপদ মুক্ত হবার জন্য তান্ত্রানুষ্ঠান করে থাকে তবে তার বিপদ যত তাড়াতড়ি যাবে ততই তার মঙ্গল ,আর মানুষের  বিপদ যদি কোনো তিথি ও স্থান দেখে আসেনা তবে সেই বিপদ মুক্ত হবার জন্য তান্ত্রিকাচার করতে তিথি ও স্থানের বাধ্যকতা থাকতে পারে না। তন্ত্র শাস্ত্র শুধু ভারতবাসীর জন্য বা ভারতের তীর্থস্থানীয় কিছু মানুষের জন্য নিশ্চই নয় সেটা সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য ,আর যদি তাই হয় তবে কাউকে ইউরোপ থেকে কামাখ্যা তে এসে করতে হবে তার কোনো সদর্থক ব্যাখ্যা নেই। আবার  আমার বিপদ এখন আর তারজন্য তান্ত্রিক পদক্ষেপের জন্য   অমাবস্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করা অসম্ভব। তাই তন্ত্র চর্চা হতে   হবে আপনার স্থান ,কাল ও পাত্রের আনুকূল্যে যাতে আপনার কাজে বিঘ্ন না হয় । কামাখ্যা থেকে যজ্ঞ করলে সেটা ভালো হয় আর নিজের নিজের ঘরে কামাখ্যা মন্দিরে থেকে যজ্ঞ করলে তত ভালো হয় না এই ধারণা সংকীর্ণতা মাত্র। আপনি আপনার সময় মতো ,আপনার সঠিক সময়ে ,সঠিক স্থানে থেকে পদক্ষেপ নিন ,সেটাই আপনাকে সফলতা দেবে।                   FAQ 14)   তন্ত্র ক্রিয়া  কখন সফল ও ব্যর্থ  হয় ? উত্তর - ইচ্ছা ও শক্তির মিলন ঘটানো ই তন্ত্রের সাফল্য অথবা  আমাদের দেহের মধ্যে ও বাইরে যে ৫ টি  উপাদান আছে তার সাথে সম্বন্ধ স্থাপন করা ই তন্ত্রের সফলতা। জল ,বায়ু ,অন্তরীক্ষ ,মাটি ,আগুন এইগুলো ই পৃথিবীর উপাদান  আর এইগুলো ই আমাদের মানব দেহের উপাদান বাইরের আগুন ,জল প্রভৃতির  সাথে আমাদের ভিতরের আগুন ,জলের মধ্যে সংযোগ হোলেই তন্ত্রের সফলতা হয় কিন্তু এটা শুধু কামাখ্যা  আর অমাবস্যা তিথির ওপর নির্ভর করে না। যেমন তন্ত্রের একটি নেগেটিভ ফোর্সের প্রয়োগ বলছি যেটা পাশ্চত্যে ব্ল্যাক ম্যাজিক হিসেবে সমাদৃত - একটি মাটির পুতুল কে যদি কষ্ট দেওয়া হয় তাহলে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি ও কষ্ট পায় তার কারণ মানব দেহের মধ্যে যে মাটি আছে আর পুতুল টা যে মাটি দিয়ে গড়া ২ টি ই এক মাটি অথবা এই ২ মাটির মধ্যে সম্পর্ক আছে ,আর যিনি এই ২ মাটির সাথে দক্ষতার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন তিনি ই এই প্রয়োগে সফল হবেন। কিন্তু এটা বলা যত সহজ করা ততই কঠিন ,তাই তন্ত্র বিদ্যা কে কঠিন বা গুপ্ত বিদ্যা বলা হয়েছে তাই সফল হতে গেলে   দক্ষতার সাথে ইন্সট্রাকশন গুলো অনুসরণ করতে হবে , সাধ ও সাধ্যের মিলন ঘটাতে হলে মানে সফল হতে গেলে চঞ্চলতা ত্যাগ করে ,সংকল্প কে ধরে রেখে ,সময় নিয়ে কাজ করতে হবে পেশাদারিত্বের কারণে অনেক সময় পেশাদার তান্ত্রিক তার যজমান বা ক্লায়েন্টের কাজে উপযুক্ত সময় ,মনোযোগ, না দিলে তন্ত্র ক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে , ক্লায়েন্টের কেস হিস্ট্রি ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ না করে বা অনুপোযুক্ত পদক্ষেপ  নিলে তন্ত্র ক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে। তান্ত্রিকের কাজের মধ্যে ত্রূটি থাকলে বা ক্লায়েন্ট কে দেওয়া সাজেশন ও নির্দেশ গুলো ঠিকমতো পালন না করতে পারলেও তন্ত্র ক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে। যেকোনো তান্ত্রিক ক্রিয়া হলো  একটি প্রজেক্ট ,আর একটি প্রজেক্ট এ অবধারিত কিছু নিদৃষ্ট পরিমানে কিছু  সামগ্রী দরকার হয় তবে অনেক সময় তা ব্যয় বহুল হয়ে থাকে অন্য দিকে ক্লায়েন্টের সেই সক্ষমতা না থাকলে কোনো কোনো তান্ত্রিক ক্লায়েন্টের সামর্থের দিকে তাকিয়ে প্রয়োজনীয় তান্ত্রিক পদক্ষেপের সাথে আপস করেন , তাঁর ক্রিয়া ব্যর্থ হবার এটাই বেশি কারণ।  ক্লায়েন্ট কে ধরে রাখার জন্য যেকোনো উপায়ে যেকোনো পরিমান অর্থ নিয়ে কাজ করবার প্রবণতা ই এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী। টার্গেট অনুসারে প্রজেক্ট নির্ধারিত হয়ে থেকে ,আর প্রজেক্ট অনুসারে অর্থ মূল্য নির্ধারিত হয় উচিত ,তান্ত্রিকের ইচ্ছা আর ক্লায়েন্ট এর সামর্থের উপর মূল্য নির্ধারণ  নির্ভর করে না।গরিব আর ধনী যার ই  ক্যান্সার হোক না কেন তার চিকিৎসা সমান। ছোট ছোট সমস্যার জন্য  বড় তান্ত্রিক দরকার হয় না , কাজের সফলতার ও ব্যর্থতার জন্য মূলত  দায়ী সততা ও অসততা। এই ছাড়া ও তন্ত্র ক্রিয়ার সফলতা বা ব্যর্থতা সেই সময়কালীন কিছু প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে আর সেটা সেই সময়ের মধ্যে বিবেচ্য থাকে।                                  

FAQ15 ) তন্ত্রের  কি  কি  মার্গ  আছে?  উত্তর - তন্ত্রের মধ্যে ২ টি মার্গ আছে একটা দক্ষিণ মার্গ আর একটা বাম মার্গ।  পসিটিভ ফোর্স দিয়ে যে মার্গের কাজ সম্পাদন হয় সেটা ই মূলত দক্ষিণ মার্গ মানুষের জীবন ধরণের জন্য যে গুলো প্রয়োজনীয় ,ফুল পাতা ,সুগন্ধি , সুখাদ্য ,সুপেয় ইত্যাদি সাত্ত্বিক ও রাজসিক বস্তু বলে বিবেচিত যে গুলো সেই গুলো ই হলো দক্ষিণ মার্গের উপাদান ,যেমন পূজা  ,যজ্ঞ , প্রার্থনা ,সঙ্গীত প্রভৃতি। নেগেটিভ ফোর্সের বস্তু সমূহ দিয়ে বাম মার্গের কার্য সম্পাদন হয় ,এটা সাধারণত তামসিক বস্তু সমূহের মধ্যে পরে , মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী যে দ্রব্য বা মৃত্যুর পরে অবশিষ্ট থাকে যে দ্রব্য যেমন শ্মশানে পরে থাকা বস্তু ,মৃত দেহ ,কাপড় ইত্যাদি এসব দিয়ে মূলত বাম মার্গের কাজ ,বলা যায় অঘোরী সম্প্রদায় মূলত হিন্দু তন্ত্রের এই বাম মার্গ কে ই ভিত্তি  করে রয়েছে ,নেগেটিভ ফোর্স দিয়ে নেগেটিভিটি দূর করা ই এই মার্গের উদেশ্য।             FAQ 16)-ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শক্তি কি ? এর  বস্তু  গত  উপাদান  কি  কি  ? আর এর উৎপাদন ই বা কিভাবে হয় ?   উত্তর - মানুষের জীবনে আসলে  শক্তিএকটি ই  আছে তবে তার অভিমুখ ২ টি সেগুলো ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শক্তি বা পসিটিভ ও নেগেটিভ ফোর্স। মানুষ তার  জীবনে এই ২ অভিমুখী  শক্তির জন্য সুখ ও দুঃখ অনুভব করতে পারে। কোনো মানুষের জীবন ২ টি ফোর্স ছাড়া হতে পারে না ,তবে অতিরিক্ত নেগেটিভ ফোর্স মানুষের জীবনে সৃষ্টি হওয়া মানে তার জীবনে দুঃখের ঘনঘটা আসতে চলছে বা এসে গেছে বা ইতি মধ্যে বিপদের মধ্যে আছে। আর এই নেগেটিভ ফোর্স কে তার জীবন থেকে প্রয়োজনীয় ভাবে দূর করবার যে প্রক্রিয়া গুলো ই প্রধানত  তন্ত্র শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে। তবে কারো জীবন থেকে যেমন তন্ত্রের মাধ্যমে নেগেটিভ ফোর্স নষ্ট করা যায় তেমনি পসিটিভ ফোর্স ও নষ্ট করা যায় আর নেগেটিভ ফোর্সের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো   ব্ল্যাক ম্যাজিক আর  এই জাতীয় আরও  প্রয়োগ যেমন বিদ্বেষন ,উচ্চাটন ,স্তম্ভন ,মারণ ইত্যাদি । নেগেটিভ ফোর্স মানুষের গঠন মূলক বা কল্যাণ মূলক কাজে তেমন প্রয়োগ হয় না ,নেগেটিভ ফোর্স সাধারণত কাউকে বাধ্য করানো ,কাউকে চাপে রাখা ,কাউকে দমন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। পসিটিভ ফোর্স মানুষের উন্নতি ,ও গঠন মূলক কাজে ব্যবহৃত হয় ,এর কয়েকটি মাধ্যম হলো পূজা ,যজ্ঞ ,যন্ত্র ,কবজ তাবিজ ইত্যাদি।  পসিটিভ ফোর্স বা ধনাত্বক শক্তির উপাদান হলো যেমন  মানুষের জীবন ধরণের জন্য যে গুলো প্রয়োজনীয় ,ফুল পাতা ,সুগন্ধি , সুখাদ্য ,সুপেয় ইত্যাদি স্বাত্বিক ও রাজসিক বস্তু বলে বিবেচিত যে গুলো সেই গুলো ই হলো পসিটিভ ফোর্সের উপাদান। নেগেটিভ ফোর্সের উপাদান  সাধারণত তামসিক বস্তু সমূহের মধ্যে পরে , মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী যে দ্রব্য বা মৃত্যুর পরে অবশিষ্ট থাকে যে দ্রব্য যেমন শ্মশানে পরে থাকা বস্তু ,মৃত দেহ ,কাপড় ইত্যাদি। এবার প্রশ্ন আসা উচিত আমাদের জীবনে এই শক্তি গুলো কিভাবে সঞ্চার হয় ? পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রভাব আর আমাদের নিজেদের কাজের মধ্যে দিয়ে এই শক্তির সঞ্চার হয়। আমাদের ইন্দ্রিয় গুলোর অপব্যবহার ই নেগেটিভ ফোর্সের মূল কারণ ,যেমন লোভ ,হিংসা। অলসতা ,মিথ্যাচার ইত্যাদি।আর  পূজা,জপ , ধ্যান ,দান ,পরোপকার ,পরিশ্রম ও  সততা ইত্যাদি হলো পসিটিভ ফোর্স উৎপাদনের উপায়।  দুই জন   সমান সুখী হলেও সকলের পসিটিভ  ফোর্স সমান নাও হতে পারে  এ যেমন একজন প্রধান মন্ত্রীর আর একজন দিনমজুর এঁরা দুই জনে সুখী বলে দাবি করলেও  এদের পসিটিভ ফোর্স পসিটিভ ফোর্স সমান নয়। https://www.youtube.com/watch?v=FLAaIpTZfjQ  

FAQ 17) সত্যিকার তান্ত্রিক অর্থ কিংবা সম্পত্তি চায় কি ? উত্তর - একজন তান্ত্রিক নিষ্কাম সাধক নাও হতে পারে ,তিনি কাউকে কিছু পাইয়ে দেবার বিনিময়ে কিছু কাম্য বস্তু আশা বা দাবি করতে পারেন আর সেটা আপনার পক্ষে সম্ভব কিনা সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে তান্ত্রিক আসল হোক আর নকল হোক তাকে কাজ করতে গেলে বস্তু বা সামগ্রীর প্রয়োজন আর সেগুলো দরকার  হবে সংগ্রহ করা আর বর্তমান বাজারে তার একটা আর্থিক মূল্য নিশ্চয়ই থাকবে। তাছাড়া কাম্য বস্তু পেতে গেলে দেবতাকে ও তো কাম্য বস্তু অর্পণ করতে হয়  এটাই স্বাভাবিক আর সেক্ষেত্রে কোনো তান্ত্রিক আপনার কাছে অর্থ মূল্য দাবি করলে সেই তান্ত্রিক নকল বলে বিবেচিত হতে পারেন না ,দ্বিতীয়ত , একজন সাধারণ মানুষ সারা জীবন কাম্য বস্তুর পিছনে ছুটে থাকে , শিশু কাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই পার্থিব বিষয় আর বস্তুর প্রতি তার আকর্ষণ ,ফলে এই রকম কামনাসক্ত মানুষের কাছে  এই কাম্য বস্তু ছাড়া আর দেবার মতো কি ই বা আছে ? সারা জীবন তো অর্থ আর সম্পদ ই সঞ্চয় করেছে ,কাম্য বস্তু চাওয়া এক প্রার্থী বা ক্লায়েন্টের কাছে কাম্য বস্তু বা অর্থ চাওয়া নকল তান্ত্রিকের কোনো পরিচয় নয় ,তান্ত্রিকে সাধু হতে হবে তার কোনো মানে নেই তাবে একজন তান্ত্রিক কে সৎ হতে হবে। যেন ক্লায়েন্টের প্রদত্ত অর্থ তিনি সঠিক  ভাবে খরচ করেন।  এখানে একটু বলে রাখি ,অনেকে মনে করেন যে তান্ত্রিক  অনলাইন এ  কাজ করেন তারা হয়তো অসৎ হয়ে থাকেন বা যারা অফলাইনে কাজ করেন তারা হয়তো সৎ হয়ে থাকেন ,তাই কেউ কেউ স্থানীয় তান্ত্রিকের সাথে সাক্ষাৎ করে কাজ করতে চান। কিন্তু যিনি সৎ তার কাছে অনলাইন বা অফলাইন ,দেশের বাইরে বা ভিতরে বলে কিছুই হয় না। তাই তান্ত্রিকের সততার পরিচয় আপনার বুদ্ধি মত্তা দিয়ে বিচার করুন ,অনলাইন বা অফলাইন দিয়ে নয়।                 FAQ 18) কবজ  ও তাবিজ  কি ? কিভাবে  এগুলি ব্যবহার করা উচিত ?                       উত্তর - কবজ   বা  তাবিজ হলো পসিটিভ ফোর্সের একটি জনপ্রিয় ও শক্তিশালী মিডিয়া বা মাধ্যম। তান্ত্রিক পদ্ধতি তে যন্ত্র অঙ্কন করে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে ,যন্ত্রের পূজা করে ,জপ করে , কোনো বস্তুর সন্নিবেশ করে  কবজের প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে। কবজ প্রতিষ্ঠার আগে ও পরে যে পূজা ,জপ বা যজ্ঞ  করা হয় সেই পসিটিভ ফোর্স  কে আরও সহজ ভাবে ও অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি প্রতিক্রিয়াশীল করবার জন্যই ই এই কবজ। কবজ হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে ই সেই তান্ত্রিক পূজা বা আচারের উদেশ্য  ব্যর্থ নাও হতে পারে। দেবতাকে জাগ্রত করা ,বা দেবতার থেকে শক্তি প্রার্থনা করা অর্থাৎ দৈব শক্তি ই হলো কবজ এর উৎস ,তাই কবজের পবিত্রতা বা অপবিত্রতা এর বিষয় থাকে সেইজন্য কবজ মানুষের শরীরে অলংকারের মতো ধারণ করা উচিত নয় ,কবজ কে শরীর থেকে আলাদা করে পবিত্রতার সাথে ,সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে বহন করা উচিত বা পূজা স্থানে,মন্দিরে রাখা উচিত ,কোনো ,কোনো কবজ কে তো  পূজা করবার বিধান ও রয়েছে যেমন মহা মৃত্যুঞ্জয় কবজ।   আরও কয়েকটি সাধারণ কবজ হলো -মোহিনী বশীকরণ কবজ , ধনদা কবজ ,বাগলামুখী কবজ ,নীল সরস্বতী কবজ প্রভৃতি। আর তাবিজ হলো কবজ এর ক্ষুদ্র সংস্করণ ,তাবিজ আকারে ছোট হয়ে থাকে ,তাবিজের শক্তির উৎস হলো  দ্রব্য বা বস্তু তাই  তাবিজের পবিত্রতা বা অপবিত্রতার বিষয় নেই।সেজন্য  তাবিজ শরীরে ধারণ করা হয়।  সাধারণত বৃক্ষের ,গুল্মের শিকড় দিয়ে তাবিজ করা হয় ,তাবিজের শক্তি সংক্ষিপ্ত তাই খুব গৌণ উদ্দেশ্যে তাবিজের ব্যবহার করা হয়  https://www.youtube.com/watch?v=ZXWqiI6AFDU                                                                                                                                  FAQ-19)জ্যোতিষ কাকে বলে ?    উত্তর -মানব দেহের আত্মা যেকোনো সময় শরীর ছেড়ে চলে যেতে পারে আর তার কোনো নির্ণায়ক নেই মানুষের হাতে। পদ্মের পাতায় যেমন নদীর জল , এখানে পদ্ম হলো মানুষের শরীর ,পদ্ম পাতায় থাকা জল হলো আত্মা ,আর বয়ে চলা বিশাল  নদীর জল হলো পরমাত্মা সরূপ ,পদ্ম পাতার জল আর নদীর জল একই জল ,একে ওপরের সাথে চিরন্তন আকর্ষণ আর সম্পর্ক আর তার জন্য পদ্মের জল খুব ই চঞ্চল হয় বয়ে চলা নদীর সাথে মিশে যেতে। কিন্তু মানব দেহ আর মানুষের মন মোহাবিষ্ট হয়ে আত্মার এই চঞ্চলতা কে অশনি সংকেত হিসেবে  দেখে ,প্রতিটি মুর্হুর্তে ভবিতব্য নিয়ে সংশয় আর কৌতূহল থাকে ,আর সেই  সংশয় আর কৌতূহল মেটানোর জন্য মানুষ প্রাচীন কাল থেকে অনুসন্ধান করে আসছে কোনো ঘটনার পূর্বাভাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবার।ঘটনার  পূর্বাভাস  সম্পর্কে তথ্য পাবার কিছু অভিপ্রায় হলো জ্যোতিষ।  জ্যোতি এর সাথে ঈশ ধাতু যুক্ত হয়ে জ্যোতিষ হয়েছে। জ্যোতি  মানে আলো তাহলে জ্যোতিষ মানে হয় জ্ঞানের আলো। যে প্রদীপের আলোক শিখা যত বেশি প্রসারিত থাকে সেই প্রদীপ তাতো দূর  আলোকিত করতে পারে অর্থাৎ  যত জ্ঞান ততই দূরদর্শিতা। তাই জ্যোতিষ কে  বেদ এর  চক্ষু ও  বলা হয়েছে।                                                     FAQ-20)-ভাগ্য ও কর্ম কাকে  বলে ? জ্যোতিষ কি ভাগ্য নির্ণয় করতে  বা পরিবর্তন করতে পারে ?  উত্তর- জ্যোতিষ ও ভাগ্য নিয়ে কথা বলবার আগে জন্মান্তরবাদ কে আগেই স্বীকার করতে হবে।  অনেকে ই যারা বলেন যে ভাগ্য বলে কিছুই নেই তারা ও ভুল বলেন ,আবার যারা সব কিছুই ভাগ্যের হাত বলে মনে করেন তারাও  ভুল বলেন। ভাগ্য আর  কর্ম আলাদা।  আমাদের কর্মদিয়ে আমাদের যে ইচ্ছানুযায়ী যে ফল  কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না সেটাই ভাগ্য।আমার মৃত্যুর পর আবার কোন ঘরে, কার ঘরে , কি বেশে ,কিরকম শরীরে ,কি রকম চেহারাতে জন্ম গ্রহন করবো সেটা আমি আমার কোনো নির্দিষ্ট কর্ম দিয়ে নির্দিষ্ট করতে পারিনা বা আগের থেকে জেনে যেতে পারি না আর যেহেতু সেটা জানি না তাই ভাগ্যের পরিবর্তন ও আমি করতে পারি না।এই জন্য ভাগ্য কে অদৃষ্ট বলা হয় ,ভাগ্য যদি দৃষ্ট হতো তবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যেত।  পরবর্তী জনমে আমি সুন্দরী নারী হয়ে জন্মাবো কি না তার কোনো নিশ্চয়তা আমি আমার এই ইহ জীবনে নির্ণয় করতে পারি না। সেই কারণে মানুষ কে ভাগ্যের পুতুল ও বলা হয়েছে।তবে এক জীবনে মানুষ যত কর্ম করে আর তার সকল কর্মের ফল ভোগ করে মৃত্যু বরণ করেন সেটা ও নয় অনেক কর্মের ফল বাকি থেকে যেতে পারে আর সেটা ও তাকে পরবর্তী জন্মে অথবা জন্মের আগে অদেহী অবস্থা তে ভোগ করতে পারেন তবে  জীবনে  কিন্তু জন্মের ঠিক পরের মুহূর্ত  থেকেই শুরু হয় কর্ম জীবন কর্ম অনুসারে আমি ফল লাভ করি ,দুঃখ ও দারিদ্রতা আমাদের কর্মের ফল এটা নির্ধারিত ভাগ্য নয়। তবে পূর্ব জীবনের কিছু প্রবণতা থাকা টা অসম্ভব নয় কিন্তু যেটা  কে বর্তমানের কর্ম দিয়ে নিয়ত্রন করা যায় সেটা আর ভাগ্য বলে বিবেচিত হয় না। তবে সাধারণ মানুষ তার নিজস্ব ক্ষমতা কে আবিষ্কার না করতে পারলে সব কিছুই ই ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন মনে করে বসে। তবে ভাগ্য আর কর্ম এর দুইয়ের মাঝ খানে আর একটা বিষয় আছে সেটা হলো 'সম্ভাবনা।' বর্তমান জীবনের কর্ম ও পূর্ব জীবনের কর্ম এই সম্ভবনা কে বাড়িয়ে দেয়। যেমন লটারি খেলা তে জয় লাভ। এমন কোনো কর্ম নেই যা করলে আমি আজকের লটারি খেলা তে  নিশ্চিত ভাবে জয়ী হবো কিন্তু বার বার খেলে জয়ী হবার সম্ভাবনা কে বাড়িয়ে দিতে পারি। যেমন ভালো কাজ করলে ভালো ফল পাবার সম্ভাবনা থাকে।  শাস্ত্রানুসারে যেমন বলা হয়েছে -পূর্ব জীবনে বা বর্তমান জীবনে কেউ যদি গোপনে অর্থ দান করে তবে সে লটারি বা হঠাৎ অর্থ প্রাপ্তির  সম্ভাবনা বেশি থাকে। পূর্ব জীবনের কর্ম ফল অনুসারে বর্তমান জীবন কেমন হবে জ্যোতিষ  তার একটা অনুমিত সম্ভাবনা কে উস্কে দেয় মাত্র। ভাগ্য যদি বলা ই যাবে তবে তো তা কর্মের দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব  তাহলে  ভাগ্যের আর কি তাৎপর্য থাকলো ,আর যিনি নির্দিষ্ট ভ্যাগ্য বলে  দাবি ই যদি  করে  তাহলে  তিনি সেই ভাগ্য পরিবর্তন ই বা কি করে করেন ? তার মানে জ্যোতিষীরা যা বলেন সেটা ভাগ্য নয় ,সেটা অনুমিত বা বিশ্বাসিত সম্ভাবনা মাত্র। জ্যোতিষ চর্চার মানে হওয়া উচিত মানুষের কল্যাণকর দিক গুলো কে আরও বেশি সম্ভনা ময় করে তোলা।মানুষ বিশ্বাস করেন যেকোনো কিছু ঘটার আগে কোনো কারণ বা পূর্বাভাস থাকে তাই কিছু ভালো বা মন্দ কিছু হবার আগেই তার কিছু পূর্বাভাস বা লক্ষণ অনুসন্ধান করতে চেষ্টা  করেন তার  ,উদ্দেশ্য হলো খারাপ ঘটনার পূর্বাভাস পেয়ে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা। সময়ের ও বাহ্যিক লক্ষণ বিচার ,বিশ্লেষণ হলো এই সম্ভবনা নির্ণয়ের মূল ভিত্তি। বাহ্যিক লক্ষণ গুলো যেমন ফেস রিডিং ,হস্ত রেখা , কণ্ঠস্বর প্রভৃতি শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ সমূহ। সময়ের বিচার হলো গ্রহ নক্ষত্র এর গতি ও অবস্থান নির্ণয় করে জাতকের এই জীবনের সম্ভবনা কে আবিষ্কার করা। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে জ্যোতিষ শাস্ত্রের লগ্ন থেকে ভাগ্য নির্ণয় করা হয়। তবে আমার মতে , ভাগ্য নির্ণয় করার থেকে ভাগ্য নির্মাণ করা শ্রেয়। লগ্ন থেকে ভাগ্য তৈরী হয় সেটা যথার্থ ই ,তবে এই লগ্ন বা সময় মানুষ তার জীবনে যত ভালো ব্যবহার করতে পারবে তার ভাগ্য ততই ভালো হবে। যে যেটা বিশ্বাস করে করুক কিন্তু তাকে তার জীবনের সমস্যার বিরুদ্ধে সময় মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। সময় বা লগ্নের সু ব্যবহার ই মানুষের সফলতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।                              FAQ-21)- মানব জীবনে জ্যোতিষ ও তন্ত্রের প্রভাব কতখানি ? উত্তর - মানব দেহের আত্মা যেকোনো সময় শরীর ছেড়ে চলে যেতে পারে আর তার কোনো নির্ণায়ক নেই মানুষের হাতে। পদ্মের পাতায় যেমন নদীর জল , এখানে পদ্ম হলো মানুষের শরীর ,পদ্ম পাতায় থাকা জল হলো আত্মা ,আর বয়ে চলা বিশাল  নদীর জল হলো পরমাত্মা সরূপ ,পদ্ম পাতার জল আর নদীর জল একই জল ,একে ওপরের সাথে চিরন্তন আকর্ষণ আর সম্পর্ক আর তার জন্য পদ্মের জল খুব ই চঞ্চল হয় বয়ে চলা নদীর সাথে মিশে যেতে। কিন্তু মানব দেহ আর মানুষের মন মোহাবিষ্ট হয়ে আত্মার এই চঞ্চলতা কে অশনি সংকেত হিসেবে  দেখে ,প্রতিটি মুর্হুর্তে ভবিতব্য নিয়ে সংশয় আর কৌতূহল থাকে ,আর সেই  সংশয় আর কৌতূহল মেটানোর জন্য মানুষ প্রাচীন কাল থেকে অনুসন্ধান করে আসছে কোনো ঘটনার পূর্বাভাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবার।ঘটনার  পূর্বাভাস  সম্পর্কে তথ্য পাবার কিছু অভিপ্রায় হলো জ্যোতিষ। মানব জীবনের ভবিষ্যতের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে জীবনের সমন্বয় করতে পারে জ্যোতিষ । মানব জীবনে জ্যোতিষের ভূমিকা বিদ্যমান । আর জ্যোতিষ থেকে  তথ্য লাভ করবার পর সেই সম্ভাবনার পক্ষে বা বিপক্ষে পদক্ষেপ নেবার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো  তান্ত্রিক কর্মকান্ড। জ্যোতিষ সম্ভাবনা কে প্রকাশ করতে চেষ্টা করে আর তন্ত্র সেই সম্ভবনা কে বাড়িয়ে দেয় অথবা আপনার চাওয়া কে বাস্তবায়িত করবার প্রচেষ্টা করে। তবে জ্যোতিষে বা লক্ষণ শাস্ত্রে ঘটনার পূর্বাভাস সম্পর্কে যে সব বিবরণ দেওয়া  হয়েছে সেই সব পূর্বাভাস সব সময়ে পরবর্তী ঘটনার সাথে মিলে না। যেমন রাস্তায় বিড়াল দেখা ,এটাকে অশুভ ঘটনার পূর্বাভাস হিসেবে মনে করা হলে ও সর্বত্র এর প্রভাব দেখা যায় নি।জ্যোতিষ হলো পূর্বজীবনের কর্ম ফলের বাকি একটা আনুমানিক হিসাব তবে সেই হিসাব বর্তমান কর্মের মাধ্যমে প্রভাবিত বা নষ্ট ও হয় যেমন  কোনো জাতকের কোষ্ঠিতে অনেক উন্নত ও শুভ যোগ থাকলে ও অনেক সময় বাস্তব জীবনে তার প্রভাব দেখা যায় না। জাতকের হাতে আয়ু রেখা না থাকলে তিনি দীর্ঘজীবী হয়েছেন। একই সময়ে ও মুহূর্তে জন্ম  হওয়া জাতকের কোষ্ঠী এক রকম হলেও তাদের জীবন আলাদা ,নির্দিষ্ট প্যাকেজে তাদের জীবন চলেনা ,আর এইসব চিন্তা থেকে এটা স্পষ্ট যে মানুষ ভাগ্য তো জানতেই পারে না তবে আগত সম্ভাবনা কেও বিশ্লেষণ করতে ভুল করে ফেলে ,তবুও মানুষ ভবিতব্য কে নিয়ে চর্চা করে যাচ্ছে ,বর্তমান কে বিশ্লেষণ করে ভবিষৎ কে অনুমান করে নেওয়া ই সব থেকে নির্ভর যোগ্য যুক্তি বলে বর্তমানে  স্বীকৃত। তাই জ্যোতিষ যেটাই বলুক না কেন পাশাপাশি  আপনি কি চান সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন কি পদক্ষেপ নিলে আপনার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেবন আর এই বিষয়ে যিনি বা যে তান্ত্রিক আপনাকে সততার  সাথে সাহায্য করতে পারবেন তার সহযোগিতা নিতে পারেন। সহযোগিতা আপনাকে যে কেউ করতে পারে তবে কে আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবে সেটা আপনার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নির্বাচন করবেন।  

leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Your Name (required)

Email (required)

This email is not valid

Mobile No (required)

Thanks for commentining us.

Some issue during.......